• Estuary of Teesta and Rangit Rivers

  • Teesta View Point

  • Chatakpur, Darjeeling

  • Chilapata Forest

Wednesday, March 23, 2022

ব্যারাকপুর অন্নপূর্ণা মন্দির - Annapurna Mandir at Barrackpur

 অবিকল দক্ষিণেশ্বর, তফাত শুধু আরাধ্য দেবী। দক্ষিণেশ্বরে মন্দিরে আরাধ্য দেবী হলেন মা কালি আর এখানে আরাধ্য দেবী হলেন মা অন্নপূর্ণা। আর একটাও তফাত আছে দক্ষিণেশ্বরে ১২ টা শিব মন্দির আর এখানে ৬ টা শিব মন্দির। বহু পুরোনো ১৮৭৫ সালে এই মন্দির টি তৈরি হয় আর স্বয়ং রামকৃষ্ণদেব এই মন্দির টির উদ্বোধন করেন। আমাদের অনেকেরই এই মন্দির টি অজানা ছিল, কিন্তু রাণী রাসমণি সিরিয়ালে এই মন্দিরটি দেখানোর পর থেকে এটা আমাদের অনেকেরই কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর এই মন্দির দর্শন করার ইচ্ছে জাগে।







তাই কয়েকদিন আগে কয়েকজন বান্ধবী মিলে গেছিলাম মন্দির দর্শনে। ব্যারাকপুরে অবস্থিত এই মন্দির, ব্যারাকপুর অন্নপূর্ণা মন্দির নামেই পরিচিত। অনেকটা জায়গা নিয়ে এই মন্দির আর পাশেই খুব সুন্দর বাঁধানো গঙ্গার ঘাট, সেখানে বসার সুন্দর ব্যাবস্থা করা আছে। মন্দিরে পুজো দেওয়ার ও ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা আছে, তবে পুজো দিতে গেলে কিন্তু যা দিয়ে পুজো দেবেন ফুল, মিষ্টি, ধুপ অন্য কোথাও থেকে কিনে নিয়ে যেতে হবে, মন্দির এর সামনে কোনো দোকান নেই।

মন্দির পরিদর্শনের ছোট্ট একটা ভিডিও বানিয়েছি চাইলে দেখে নিতে পারেন। https://youtu.be/4A2Vhu_SJZA

Sharmistha Pramanic








কোলকাতার সবথেকে বড় জগন্নাথ মন্দির -The Largest Jagannath Temple of Kolkata

 হোলির দিন মা বাবা কে নিয়ে ঘুরে এলাম কোলকাতার সবথেকে বড় জগন্নাথ মন্দির থেকে 

ইচ্ছা থাকলেও সব সময় পুরি গিয়ে জগন্নাথ দেবের দর্শন করা সম্ভব হয় না তবে দর্শন তো করতেই হবে তাই চলে এলাম কলকাতার জগন্নাথ টেম্পেলে ...
অনেকে আবার এই মন্দিরকে কলকাতার পুরি ও বলে কারণ এই মন্দিরের structure থেকে শুরু করে নিয়ম-কানুন পুজোপাঠ এমনকি মহাপ্রসাদ বিতরণ সবই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সাথে একদম এক | এ যেনো কলকাতাতে বসেই জগন্নাথ লাভ 
তাছাড়া আপনি এখানে ঠাকুরের প্রসাদ হিসাবে পাবেন পুরীর স্পেশাল খাজা 
প্রধান মন্দির ছাড়াও রয়েছে অনেক ছোট ছোট হিন্দু দেব দেবীর মন্দির আর প্রধান মন্দিরের গায়ে ফুটে উঠেছে উড়িষ্যার বিভিন্ন নকশা |











মন্দির খোলার সময় সকাল 6 টা থেকে দুপুর 1 টা অবধি আর বিকাল 4 টা থেকে রাত 9 টা অব্দি | | |
মহাপ্রসাদ খেতে হলে আপনাকে আগের দিন নিচে দেওয়া ফোন নাম্বারে ফোন করে বুকিং করে রাখতে হবে
Phone number (office) 033-2459-1500 \ 9748705115\ 7003300947 \ 9830110767 \ 9836247710
আর এই মন্দিরের সমস্ত খুঁটি নাটি details নিয়ে আমাদের channel "The BongXplorer" এ একটি সুন্দর গল্প তৈরি করেছি আশা করি ভালো লাগবে |

Saikat Banerjee 


Sunday, February 13, 2022

দাওয়াইপানি, দার্জিলিং - Dawaipani, Darjeeling

 দার্জিলিং থেকে মাত্র কুড়ি কিমি দূরে, অফবিট লোকেশনের খোঁজ করা ট্রাভেলরদের পরিচিত ঠিকানা এখন দাওয়াইপানি। উল্টোদিকের পাহাড়ে দার্জিলিং আর এপাশে দাওয়াইপানি। রাতের আলোয় গোটা দার্জিলিং শহরকে দেখলে মনে হয় কোন রাজকুমারীর চিবুকে এক সোনা-মণিমুক্ত খচিত নেকলেস যেন। দাওয়াই কথার অর্থ ঔষধি আর পানি হলো জল, ব্রিটিশ কোলোনিয়াল সময়ে এই অঞ্চলের জলকে অসুখ সারানোর ওষুধ হিসেবেই ব্যাবহার করা হতো। একদিকে সবুজ পাইনের সারি আর মাঝে বয়ে চলা সর্পিল আকাঁবাঁকা রাস্তা। আকাশ পরিষ্কার থাকলে নীল আকাশের পটে আঁকা থাকা শ্বেত কাঞ্চনজঙ্ঘার উপস্থিতি। ১৫০ মতো ঘর রয়েছে এই গ্রামে। লেপচা-তামাং প্রভৃতি উপজাতির বাস এখানে। নিরিবিলিতে সবুজে ঘেরা দাওয়াইপানি আপনার ছোট একটা মন খারাপের দাওয়াই হতে পারে দুদিন কাটিয়ে গেলে। হোম্সটেতে উষ্ণ আতিথিয়তার সাথে মিলবে, ঘরোয়া খাবার। হোম্সটের জানলা দিয়েই দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার।




















দাওয়াইপানি থেকে নামচি চারধাম দেখা যায় উল্টোদিকের পাহাড়ে। এছাড়া কাঞ্চনের ভিউও অসাধারণ। দাওয়াইপানি থেকে দিনে-দিনেই ঘুরে আসা যায় দার্জিলিং ও তার আশেপাশের দেখার জায়গা যেমন জাপানিজ টেম্পল, জু, টাইগার হিল প্রভৃতি। এছাড়া লামাহাট্টা, তাকদা, তিনচুলে, পেশক, গ্লেনবার্ণ টি এস্টেট, রংলি-রংলিয়ট সব‌ই ঘুরে আসা যায়।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দাওয়াইপানির দূরত্ব ৭৫ কিমি। গাড়ি ভাড়া আনুমানিক ৩৫০০-৪০০০/-।
হোমস্টেতে থাকার খরচ-
১৫০০/- জনপ্রতি প্রতিদিন মিল সহ( ডাবল শেয়ারিং)
১৩০০/- জনপ্রতি প্রতিদিন মিল সহ
(ট্রিপল ও ফোর শেয়ারিং)
+91 6291538880
info@himalayanretreat.co.in


Sunday, January 23, 2022

তুলিন : সুবর্ণরেখার তীরে পুরুলিয়ার শেষ গ্রাম - Tulin, the last village of Purulia on the bank of Subarnarekha

 তুলিন : সুবর্ণরেখার তীরে পুরুলিয়ার শেষ গ্রাম .......

**************
তুলিনের সুবর্ণ.....
নাকি সুবর্নের তুলিন ?
ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত....
নাকি পশ্চিমবঙ্গের ?
একা যাবো...
নাকি দুজনে ?
একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে শুরু করলাম আজকের বেড়ানোর কথা ....
পুরুলিয়া নামটা শুনলেই আগুনরঙা পলাশের ছবি ভেসে ওঠে চোখের সামনে ।
.....ভেসে ওঠে ন্যাড়া পাহাড়, সবুজ পাহাড় ,টিলা , ডুংরী ও জলভরা ড্যামের ছবি .....!!



কিচ্ছু করতে হবে না ...... শুধু একটা ভিউ পয়েন্ট থেকে মাখনমাখা... কালো ফিতের মতো.... পাহাড় কে জড়িয়ে সোহাগ করা ..... পাকদন্ডী রাস্তার ছবি তুলুন ..... ব্যস! কেল্লাফতে!!!!

                                    Tulin Heritage Bunglow..... Tulin, Purulia, West Bengal

পাখিপাহাড় ..... অযোধ্যা পাহাড় .... বাগমুণ্ডি ....... গড় পঞ্চকোট..... বড়ন্তি কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি !
ছৌ নাচ , চড়িদা গ্রামের মুখোশ সহ হাজারো শিল্প সংস্কৃতির মিশেল দিয়ে পুরুলিয়া যেন পটে আঁকা এক ছবি !!!
শীতের পরে পরেই পুরুলিয়া যেন বিয়ের কনের সাজে সেজে ওঠে ..... লাল চেলি যেমন কনের রূপ ফুটিয়ে তোলে,পুরুলিয়ার পলাশও তাই !!
আমরা মুগ্ধ হই পুরুলিয়ার রূপে ,ছুটে যাই ......
গেয়ে উঠি ....." চল পলায়ে যাই ......."
সবাই মেতে উঠি পরিচিত পুরুলিয়া কে নিয়ে .....
আর ঠিক তখনই ঠোঁট ফুলিয়ে অভিমান করে "তুলিন" সুন্দরী ... সুবর্ণের কাছে অভিমান করে বলতে থাকে ......
" আচ্ছা ,তুমি বলতো .... আমি কিসে কম যাই ..... কি নেই আমার !"

                        ১৩০ বছরের মা শ্মশান কালীর মন্দিরের পাশে স্থাপিত ছয়টি মন্দির

সুবর্ণ আসলে সুবর্ণরেখা ..... সোনা উগ্লানো নদী আর তুলিন ,পুরুলিয়ার শেষ গ্রাম ......পশ্চিমবঙ্গ - ঝাড়খন্ড সীমান্তে ।
অসংখ্য ছোট ছোট পাথুরে পাহাড় যেন তুলিন সুন্দরীকে ঘিরে রেখেছে.... আর সুবর্ণরেখা বা স্থানীয়দের ভাষায় স্বর্নরেখা নদী যেন তাকে ভালোবেসেই শ্লথগতি হয়েছে .......
উদ্ভিন্ন যৌবনা তুলিন কে দেখে ধীরগতি সুবর্ণ যেন বলে ওঠে ....." ও কেন এত সুন্দরী হলো ....... "
তুলনামূলক ভাবে "তুলিন " অনেকটা কম পরিচিত নাম ......
কিন্তু তার কাছে যাওয়া যায় সহজেই
কিন্তু ......



কিভাবে যাবেন...
****************
হাওড়া থেকে হাওড়া- রাঁচি শতাব্দী এক্সপ্রেস , ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস অথবা হাওড়া - রাঁচি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধরে খুব কম সময়েই পৌঁছে যাওয়া যায় " মুরী" স্টেশনে ..... যেখান থেকে তুলিন যাওয়া তো শুধু অটোতে চাপা আর নামা!!!
আমার মত যাদের... সাঁতরাগাছি-পুরুলিয়া ধরে পুরুলিয়া যেতে পারলে সুবিধা হয় ..... তাদের চিন্তা নেই ...... দুপুরে পুরুলিয়া পৌঁছে লাঞ্চ করে বিকেল তিনটেতে পাবেন তুলিন যাবার ট্রেন ..... বিকেল সাড়ে চারটার আগেই পৌঁছে যাবেন তুলীন।
আর যদি আপনি মনে করেন আমার মতো বাইকে যাবেন তাহলে সোজা চলে আসুন বাঁকুড়ার ধলডাঙায় ....ধরুন পুরুলিয়ার রাস্তা, পৌঁছে যান ঝালদা ...... তারপর সেখান থেকে ১০/১২ কিমি দূরে তুলিন ......
যে বন্ধুরা কলকাতা থেকে আসবেন তাদেরও সামনে দুটো পথ ভায়া বর্ধমান পানাগড় ফ্লাইওভার দিয়ে আসানসোল ..... রঘুনাথপুর হয়ে তুলিন ।

                                সুবর্ণ রেখার বুকে ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই সেতুস্তম্ভগুলি

.... নতুবা চলে আসুন বাঁকুড়ায় আমার সঙ্গী হতে ....
কলকাতা থেকে তুলিনের দূরত্ব ( by road) 319 কিমি । সময় লাগার কথা 7 ঘণ্টা বড়জোর......
থাকবেন কোথায় :
****************
থাকার একটাই জায়গা .....
"তুলিন হেরিটেজ বাংলো".......
হ্যাঁ,হেরিটেজ ই তো !
১৯৩০ সালে তৈরি ,২০২০ তে নব কলেবর পেয়ে হেরিটেজ এই বাংলোও যেন এক দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে ... নিজের কৌলিন্যে !
মূল রাস্তা ছেড়ে এই বাংলোতে পৌঁছেই হবে ...." Love at first sight "



...... বাংলোর সামনের হরেক রকম গোলাপের বাগান আর সুদীর্ঘ গাছেরা দাঁড়িয়ে আছে ....আপনাকে স্বাগত জানাতে !!!
ওরা শুধু আপনাকেই স্বাগত জানাচ্ছে না ...... আগেই ওরা এই হেরিটেজ বাংলোতে স্বাগত জানিয়েছে ....
বিমল মিত্র
বিভূতি ভূষণ বন্দোপাধ্যায়
মহিষাদলের রাজকুমার
ঝালদার রাজা কে.....
তাঁদের মধ্যে যারা পাশের জঙ্গলে শিকারে গেছেন ..... শিকার করেছেন .... প্রমাণ গুলো আজও সাজানো আছে ...বর্তমান এই দোতলা বুটিক বাংলোর দেওয়ালে.....
কলকাতার মহিম চন্দ্র দে সরকার ছিলেন প্রখ্যাত ব্যবসায়ী .....তিনিই এই হেরিটেজ বাংলোর স্থাপক। খিদিরপুরের এই পরিবারের পরবর্তী বর্তমান প্রজন্ম ,এই ২০২০ সালে ২.৫ একর জমিতে এর নবারুপায়ন ঘটিয়ে এটিকে " তুলিন হেরিটেজ বুটিক বাংলো " তে পরিণত করেছেন ....
বাংলোটি দোতলা এবং লাল রঙের মেঝে ও কাঠের জানালা দরজার অ্যান্টিক রূপে অনেকটা একান্নবর্তী পরিবারের বড়ো বাড়ির মতো ।
টানা বারান্দার প্রান্তে ধোঁয়াওঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে প্রকৃতি দেখার
অঢেল ব্যবস্থা .....
নীচের তলায় খাবার জায়গাটিও খোলামেলা ...... বেশ ভালোলাগার মতো .....

                                                            Tulin Heritage Bunglow


                                                     

গোলাপ বাগান,লম্বা লম্বা গাছের সারি ,কাছের শাল জঙ্গলে বার্বিকিউ, বনফায়ার আর কাছেদুরের আদবাসী গ্রামের ধামসা মাদলের বোল আপনার মন ভালো করবেই ,এটা বাজি রেখেই বলা যায় !
বাংলো থেকে ২০ কিমি দূরেই বানসা, কামারা ও বুরুডি রয়েছে আপনারই প্রতীক্ষায় !
আর যুড়াবন জঙ্গল রয়েছে আপনার হাতের নাগালেই যেখান দিয়ে আপনি যেতেই পারেন উপজাতি গ্রামগুলোর রূপ দর্শনে "মাহাতোমারা" কে ভায়া করে ....
তিন রকম রুম রয়েছে এখানে আকারের তারতম্যে। কিন্তু পরিষেবা এক সবার জন্য .... ৩০০০- ৪০০০ এর মধ্যে .....
একমাত্র থাকার জায়গা ,তাই বুক করেই যাবেন ..... পাকা কথা বলবেন সারন্য দে ভাইয়ের সঙ্গে ....
মোবাইল :9088810611
নেট সার্চেও মিলবে ওই বাংলোর হাল হকিকত .....
এখন প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির জন্য ওরা কিছুটা ছাড়ও দিচ্ছে ....

কি খাবেন ....
*********
সকালের ব্রেকফাস্ট তো কমপ্লিমেন্টারি .....
দুপুরে মাছ,ভাত,পোস্ত,সব্জি ছাড়াও আপনি চাইনিজ ,কন্টিনেন্টাল সব ধরনের খাবার ও ব্রেকফাস্ট পাবেন ..... ইনস্ট্যান্ট চা কফির জন্য রুমে ইলেকট্রিক কেটেল এর ব্যবস্থা আছে।
ড্রাইভারের থাকাখাওয়ার ব্যবস্থাও আছে সামান্য এক্সট্রার বিনিময়ে ....
একটি তিনজনের পরিবারের সব খাবার মোটামুটি এক থেকে দেড় হাজারে মিলবে, দিন পিছু।


কি দেখবেন :
***********
অন্ততঃ দুটো রাত থাকুন।
আমার মতে তুলিন এলে তুলিনের কাছে পিঠের গ্রাম্য পরিবেশ,প্রকৃতি দেখেই কাটালে খুব ভালো লাগবে ....
তবে এখান থেকে অনেক জায়গা আপনি যেতেই পারেন .....
যেমন.....
Muruguma Dam- --- 25 km
Hudru Falls ------------ 30 km
Bagmundi village----35 km
Jonah Falls -------------42 km
Ajodhya Hills-----------46 km
Khairabera Dam -----52 km
তবে যেখানে যান , তুলিনকে বাদ দিয়ে,উপেক্ষা করে নয় !
পায়ে হেঁটে ,গাড়িতে ....যেমন ভাবে হোক বাংলো থেকে বেরিয়ে বাম দিকে 1.5 কিমি স্ট্রেট চলুন, তারপর ডানদিকে এগিয়ে হনুমান মন্দিরের কাছে "Y" ফর্ক থেকে নামোপাড়া দিয়ে সংকীর্ণ রাস্তা বেয়ে নেমে আসুন সুবর্ণরেখার পাথুরে বুকে......
আর সারাজীবন মনে রাখার মতো স্মৃতি নিয়ে যান ..... সুবর্ণের বুকে সূর্যাস্ত দেখে ।
ভুলবেন না যেন ,এ দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করতে , অনুরোধ রইলো।
অন্ততঃ একবার দর্শন করুন 130 বছরের মা শ্মশান কালীর মন্দির ,এই নদীর বুকেই.... যেখানে আপনি এখন আছেন ...
কার্তিক সংক্রান্তিতে এখানে কীর্তন, ভজনের আসর বসে ....পুণ্যার্থীরা স্নান সেরে পুজো দেন .......
আর তাই আরও ছয়টি মন্দির স্থাপিত হয়েছে ..... মহাদেব,মহালক্ষ্মী,ধর্মরাজ, সূর্য ,শীতলা ও গায়ত্রীদেবীর......
একবার তাকিয়ে দেখুন পুরানো ব্রিটিশ আমলের ব্রীজের পিলার গুলো কেমন আজও স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সুবর্ণ রেখার বুকে .....
নতুন ব্রীজ থেকে সুবর্ণের অপরূপ রূপ ক্যামেরা বন্দী করুন ..... আর ফেরার সময় দেখুন ..... ঝাড়খণ্ডের সাগুম দ্বারম অর্থাৎ স্বাগত তোরণ ...
এখনই যেতে পারেন আপনার অশান্ত,অস্থির মনে শান্তির ,স্বস্তির প্রলেপ দিতে ..... আপনার প্রিয় সঙ্গীর সাথে দুটো প্রাণের কথা নিরিবিলিতে বলতে ....পুরুলিয়ার এক ভিন্ন রূপ দেখতে .....
অথবা
রক ক্লাইম্বিং, ক্যাম্পিং ,সাইক্লিং করতে....
অথবা
শুধুই আপনার দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা দেখতে ..... ছোট ছোট পাহাড়ে ,জঙ্গলে নিজেকে হারিয়ে দিতে !!
যাই করুন .....
বার্বিকিউ, শালচিকেন আর বন 🔥 ফায়ার এর সাথে একটু নাচ গানে অংশ নিতে লজ্জা করবেন না যেন !!
আসুন ,একটু মকসো করে নিই .....come on,please....!!
"কালো জলে কুচলা তলে ডুবল সনাতন...
আজ সারা না, কাল সারা না পাই যে দরসন৷
লদীধারে চাষে বঁধু মিছাই কর আস
ঝিরিহিরি বাঁকা লদি বইছে বারমাস৷
চিংরিমাছের ভিতর করা, তায় ঢালেছি ঘি
নিজের হাতে ভাগ ছাড়েছি, ভাবলে হবে কি?
চালর চুলা লম্বা কোঁচা খুলি খুলি যায়
দেখি সামের বিবেচনা কার ঘরে সামায়৷
মেদনিপুরের আয়না-চিরন, বাঁকুড়ার ঐ ফিতা
(আর) যতন করে বাঁধলি মাথা তাও যে বাঁকা সিঁথা৷
পেছপারিয়া রাজকুমারি গলায় চন্দ্রহার
দিনেদিনে বাইড়ছে তুমার চুলেরই বাহার৷
কলি কলি ফুল ফুটেছে নীলকালো আর সাদা
কোঁড় ফুলেতে কিষ্ট আছেন কোঁড় ফুলেতে রাধা......"
Disclaimer: Some pictures are taken from internet for representation purpose only

Ranjit Dutta

Friday, December 31, 2021

ইস্কন মন্দির, মায়াপুর, নদীয়া - MAYAPUR ISKCON, Nadia

 MAYAPUR ISKCON

বছরের প্রায় শেষে ঘুরে এলাম সবচেয়ে কম খরচে মায়াপুরধাম থেকে। সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান নবদ্বীপ মায়াপুরের উদ্দেশ্যে। 

সকাল ৭.৫৫ তে শিয়ালদহ-লালগোলা ধরে চলে গেলাম কৃষ্ণনগর সিটি জংশন। সেখান থেকে অটো করে চলে গেলাম হুলোরঘাট। নৌকায় পাড় হলেই মায়াপুর। ঘাট থেকে ১০ মিনিটের হাঁটা পথ ইস্কন মন্দির।

আমি গিয়েছিলাম ৩০শে ডিসেম্বর ২০২১। লোকজন বেশ ভালোই ছিলো সেদিন। প্রথমেই গদাভবনের ভোগের কুপন কেটে নিয়েছিলাম তারপর সারাদিন ঘুরলাম। শ্রী প্রভুপাদ মন্দির, চন্দ্রোদয় মন্দির, গোশালা ঘুরে দুপুর ২টো নাগাদ গদাভবনে ভোগ গ্রহণ করলাম। পাতে ছিল পোলাও, বেগুনি, সাদাভাত, ডাল, রুটি, আলুর তরকারি, পনিরের একটা তরকারী, চাটনি এবং পায়েস। খুব সুন্দর খাওয়া দাওয়া একদম ঘরোয়া।

এখানে একটি থিয়েটার আছে(মায়াপুর ফুলডোম থিয়েটার), এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপর হিন্দি, বাংলা এবং ইংরেজিতে একটি 3D শো হয়।

মায়াপুর ইস্কন থেকে বেলা ৩ টের দিকে বেরিয়ে এসেছি এবং কৃষ্ণনগর জংশন থেকে 4.20 দিকে একটা ট্রেন ধরে শিয়ালদহের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম যেটা সন্ধ্যার সময় চলে এসেছে।

এক দিনের এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা খুব ভালো এবং খুব সুন্দরভাবে যাত্রা করেছিলাম।

যারা ১দিনের ভ্রমণ করতে যান এই উপায়ে যেতে পারেন এবং খরচ খুবই কম।












মায়াপুর কিভাবে কম খরচে ঘুরবেন আর এই একদিনের ভ্রমণের সম্পূর্ণ ভিডিও বানিয়েছি আপনারা চাইলে দেখতে পারেন তাহলে আরও তথ্য পাবেন। ভিডিও এই লিঙ্কে দেওয়া আছে 👇

https://youtu.be/NqcwAsr_Be4

Mridul Roy


Sunday, November 14, 2021

দক্ষিণবঙ্গের গভীরতম জঙ্গল এবং তালবেড়িয়া বাঁধ ( বাঁকুড়া) - Dense forest of South Bengal and Talberia Dam(Bankura)

 সত‍্যি বলতে বেশ অবাক হয়েছিলাম যখন জানতে পেরেছিলাম দক্ষিণবঙ্গের গভীরতম জঙ্গল আমার বাড়ি ঝাড়গ্রাম থেকে এতটা কাছে। বাঁকুড়া জেলার ঝিলিমিলির সুতানের জঙ্গলের কথা বলা হচ্ছে এখানে। ঝিলিমিলির বারোমাইলের জঙ্গলের একটা অংশ এই সুতানের জঙ্গল। ঝিলিমিলি-রাণীবাঁধ রোড এই বারোমাইলের জঙ্গলকে দ্বিধাবিভক্ত করে চলে গেছে। এ রাস্তার একদিকে পাহাড় আর আরেক দিকে বিস্তৃত আর গভীর খাদ। মোম-মসৃণ রাস্তা সাপের মতন এঁকেবেঁকে ওপর-নীচে ঢেউ খেলে নিজের ঠিকানায় চলে গেছে। এই রাস্তায় পাওয়া যাবে তিনটি ভিউ-পয়েন্ট যা থেকে নয়নাভিরাম চান্ডিল-দলমা রেঞ্জের সূত্রপাত আমরা চাক্ষুষ করতে পারি।






এইবারে আসি সুতানের কথায়। এই রোড ছেড়ে আপনি যখন সুতানের দিকে বাঁক নিচ্ছেন, ঠিক তখনই আপনি এক আলাদা জগতে পৌঁছে যাচ্ছেন। পাথুরে রাস্তা, একধারে খাদ, প‍্যাঁচানো রাস্তা, প্রাচীন গাছপালা, আর অফ-রোডিং অভিজ্ঞতা - সব পাবেন। ভাগ‍্য সহায় হলে ময়ূর দম্পতিদের দেখা পেতে পারেন। তারা হয়তো ভাববে, প্লাস্টিক ছড়াতে আর পরিবেশ দূষণ করতে আবার কে এলো!!! কিন্তু আপনি সেসব কিছু না করে ওদের অবাক করে দেবেন।





সুতানের জঙ্গলে জঙ্গলে কিছুক্ষণ ঘুরলেই আপনার মনের নাগরিক প‍্যাঁচ আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করবে। বিরাট বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে ছড়ানো বিশুদ্ধ বনভূমি দিয়ে যেতে যেতে মাঝে মধ্যে দু-একটা পাথুরে পথ ডানদিকে বা বামদিকে চলে যায় কোনও একটা জঙ্গলঘেরা গ্রামের দিকে। জঙ্গলে ঘুরেই কাটিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু আমাদের সাধারণ প্রবণতা থাকে কোথাও যাওয়া মানে একটা গন্তব‍্য বা স্পট থাকতে হবে। রাস্তা উপভোগ করতে আমরা ভুলে যাই। সুতানের রাস্তাই যেন এর প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু এখানেও একটা স্পট রয়েছে। একদম সুতান গ্রামের সামনেই রয়েছে পরিত‍্যক্ত C.R.P.F ক‍্যাম্প এবং ওয়াচ-টাওয়ারটি। বিগত কঠিন সময়ের সাক্ষ্য বহন করে দাঁড়িয়ে আছে এই অবশেষগুলি। সাধারণত এই ওয়াচ-টাওয়ারটির ছবি দেখলেই বোঝা যায় যে ছবিটি সুতানের ছবি। একটা ফাঁকা জায়গায় এই ক‍্যাম্প আর টাওয়ার। এগুলো ছাড়াও সেখানে নতুন একটি ওয়াচ-টাওয়ার বানানো হয়েছে আর ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের একটা গেস্ট হাউসও রয়েছে। এখনও চালু হয়েছে কিনা সঠিক জানা নেই। পিকনিক করার জন্য রয়েছে দুটো-তিনটে মতন বেদি। এছাড়াও পেছনে রয়েছে একটি বিল‍। যার পরিচয় সেরকম কোথাও পাইনি। কিন্তু বেশ একটা রেন-ফরেস্ট রকমের ব‍্যাপার আছে।



এরসাথে বোনাস হিসেবে পেয়ে যাচ্ছেন তালবেড়িয়া বাঁধের মতন সুন্দর একটি জলাশয়ে সময় কাটানোর সুযোগ। বাঁধের পাঁচিলের মাঝামাঝি জায়গা থেকে একটি সিমেন্টের তৈরী মঞ্চ আপনাকে বাঁধের কিছুটা ভেতর অবধি নিয়ে যাবে। ফলস্বরূপ, সেই মঞ্চে থাকলে আপনার তিনদিকেই দেখবেন জল। জঙ্গলঘেরা সকল জলাশয়ই মন কেড়ে নেয়। তালবেড়িয়াও তার ব‍্যতিক্রম না।



মোট কথা, কোলকাতা থেকে এলেও একদিনের ঘোরার জন্য অসাধারণ। আর যাঁদের একদিনে ঘোরা হবে না, তাঁদের থাকার জন্য এই অঞ্চলে সবচেয়ে দারুণ জায়গা হলো ঝিলিমিলির রিমিল লজ। এই সংক্রান্ত পোস্ট পেজে আগে করা হয়েছে, সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।

আর এই জায়গাটি যেহেতু নতুন নয়, এর আগে বহু মানুষ এখানে গেছেন আর ফেসবুকেও অনেক লেখালেখি হয়েছে তাই এর গুগল ম‍্যাপ লিঙ্ক দেওয়া হলো।

গুগল ম‍্যাপ লিঙ্ক:

১) সুতান:- Sutan Forest Camp

Ranibandh - Barikul Road, Sutan, West Bengal 722148

https://maps.app.goo.gl/g7UcA69ctGeXBRnD9

২) তালবেড়িয়া:- Talberiya Dam

Talberiya Road, Rautara, West Bengal 722148

https://goo.gl/maps/jkBMhxfUeh5QMUUU7



ছবি ও লেখা: Sandipan Das