Sunday, January 3, 2021

সান্দাকুফু ট্রেক পর্ব 1 - Sandakphu Trek, Part 1

সান্দাকুফু ট্রেক পর্ব 1 

13th ডিসেম্বর 2020

===============
খাগড়া ঘাট স্টেশন এর 3 নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে আপ তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস.. প্ল্যাটফর্ম এ অন্ধকার.. লাইট গুলো কোন কারনে অফ.. বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে কপালের কোনা টা কেটে গিয়েছে... জানিনা কেন আজকে সময় বার বার কোন অশুভ সংকেত দিয়ে আগামী সঙ্কট থেকে আমাকে আটকে দিতে চাইছে.. এতো জায়গায় বেড়াতে গেলাম কিন্তু এই প্রথমবার বাড়ির লোক খুব আপত্তি করেছিলো.. অজানা অচেনা মানুষ সব.. ভরসা বলতে কেদারনাথ আর আমার সিউড়ি র বন্ধু সৌরভ.. আর একজনের প্রবল টান.. আর সেই টান নিয়ে আজকের গল্প শিখরে বাঙালি সান্দাকুফু ট্রেক


অনেকেই বলবেন ও তো বহুবার গিয়েছি, খুব সহজ, সাধারন লেভেল এর ট্রেক.. কিন্তু আমার কাছে হয়তো অন্যকিছু
14th December 2020
==================
ট্রেন নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই রাত 2.30 এ NJP নামিয়ে দিলো.. মোবাইল এর ফ্ল্যাশ লাইট দিয়েও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেলাম না.
অপেক্ষা র পরে গাড়ি করে রওনা দিলাম ধোতরে র পথে সুকনার পথ ধরে কার্শিয়াং কে পাশে ফেলে ঘুম স্টেশন পেরিয়ে লেপচা জগতের থেকে দেশ থেকে 5 কিলোমিটার পরে রাস্তার ডান দিকের মোড় ধরে এগিয়ে গিয়ে মানেভঞ্জন থেকে আরো 18 কিলোমিটার পরে পৌঁছে গেলাম ধোতরে..
👉8500 ফুট ওপরে উঠে ঠান্ডা বেশ ভালো ভাবেই জানান দিলো তার অস্তিত্ব.. আশ্রয় হলো গাইড নীমার হোম স্টে কাম ট্রেকার হাট
বেড পিছু 200 টাকা..


👉জানলা খুলে দিলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা র সাথে গল্প করা যায়.. এরপর হাজির হলো গরম গরম চিকেন Momo.. আট পিস করে জন প্রতি...
একটু ধাতস্হ হয়ে গাইড এর সাথে বেরিয়ে পরলাম ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম টা ময়না করতে, ভিউ পয়েন্ট গুলো দেখতে...
🍜দুপুরে আহার মিললো ভাত, ডাল, সব্জি চার পিস করে চিকেন পেঁয়াজ লঙ্কা আর পাপর ভাজা
সন্ধ্যা বেলা চা খেয়ে টর্চ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম পাহাড়ি গ্রাম টা কে নিশাচর এর মতো ঘুরে দেখতে..রাতের আহার ছিলো রুটি আর ডিমের কারী...
😊এরপর তলিয়ে গেলাম ঘুমের দেশে.. ঠাণ্ডা এতো ইচ্ছে করছিলো কালকেই ঘুম থেকে উঠে বাড়ি ফিরে যাই কিন্তু সময় হয়তো আমার জন্য অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলো


15th December 2020
=================
ঘুম ভাঙল কিসের যেন আওয়াজে.. দেখি রুমের ভেতরে ধুপ ধাপ শব্দ.. তারপর ওরা সবাই জানলা দিয়ে এক এক করে.. ওই গানের লাইন টা ঘুম থেকে উঠেই দেখি বউ পালালো জানলা দিয়ে..
👉আসলে ভোরের আলোতে কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন অপরূপ.. সেই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করতেই সবাই... বাইরের দরজা বন্ধ কিনা..
👉এরপর সকাল হলো.. বাইরে তখন অদ্ভূত এক দৃশ্য.. রাতের শিশির মিহি তুষার কনা তে জলে রয়েছে পুরো উপত্যকা জুড়ে.. বাড়ির ছাদ থেকে মাঠের ঘাস সর্বত্র একই চিত্র..


👉চা পর্ব শেষ করে বাথরুমে গেলাম.. ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই প্রকৃতির ডাকে যেতেই হবে.. তবে কাজ শেষ এ প্রথম বার ধোয়ার পরিবর্তে মুছে নিতে হলো সৌজন্যে টিস্যু পেপার
এরপর Maggi ব্রেক ফাস্ট সেরে প্রস্তুত হলাম টংলু অব্দি ট্রেক এর জন্য.. সকাল 9:30 এ যাত্রা শুরু.. পিঠে ব্যাগ হাতে বাঁশের লাঠি যেটা খুব সাপোর্ট দিয়েছে...


👉এরপর বন জঙ্গল পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম এক অদ্ভূত দেশে.. যেখানে মেঘ গুলো খুব দ্রুত চলাচল করছে.. দূরে গরু গুলো মনের সুখে ঘাস খাচ্ছে.. তাদের গলায় বাঁধা ঘন্টা অদ্ভূত শব্দ সৃষ্টি করছে...
👉একটু ওপরে একটা রাস্তা গাইড বলল ওটাই টংলু শুরু হলো হাঁটা.. কিসের যেন আকর্ষন.. অবশেষে ট্রেকিং রাস্তা মিশে গেলো গাড়ি চলার রাস্তায়... কাঞ্চনজঙ্ঘা বার বার মেঘ এর আড়ালে কিংবা সামনে..
চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ.. যেন কোন যুদ্ধ জয়ের পরের দৃশ্য... ঘড়ির কাঁটা বলছে বিকেল 4 Pm..
টংলুর ট্রেকার হাট এ পৌঁছে সামান্য বিশ্রাম এর পরই ছুটে গেলাম.. কারণ ওই যে মেঘের দেশে সূর্য অস্ত যাচ্ছে.. আবারো রাত নামছে পাহাড়ে র বুকে.. ওই যে দূরে টুমলিং...
👉ফিরব পরের পর্বে এর পরের গল্প নিয়ে..
আজকের এই পর্বের ভিডিও শেয়ার করলাম যারা ট্রেক করেছেন বা করবেন তাদের আশাকরি মন ছুঁয়ে যাবে....
👉 https://youtu.be/sWa2vPalM8c 👈

🙏তবে আপনারা ভাবছেন সব তো ভালো খারাপ টা কি তবে? সেদিন আমিও জানতাম না খারাপ টা কি আজকে জেনেছি.. তাই আপনাদের একটা জিনিস বলে রাখি কোন গ্রুপ বা ফেসবুক এ বিভিন্ন নিত্য গ্রুপ নানা রকম ট্যুর এর আয়োজন করে...আমি বলছি না সবাই খারাপ.. শুধু যাওয়ার আগে যাচাই করে নিন.. যে ভুল টা আমার হয়েছে সেটা যেন আপনাদের না হয়... পঁচা শামুকে পা কেটে বসে আছি... জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অব্দি দিপুদা থেকে চারধাম যাত্রা সম্পূর্ন.. কিন্তু শেষ অব্দি... যাক পরে বলবো সে কথা... গ্রুপ এর সদস্য দের নতুন বছরের শুভেচ্ছা.. এডমিন সাহেব সাহেবা দের ও.. আর নতুন বছর থেকে অনেক অনেক নতুন জায়গার সন্ধান গল্প ছবি নিয়ে ফিরব এই ভাবেই.... ভালো থাকুন সবাই.. সতর্ক থাকুন..

Koushik Pal

0 comments:

Post a Comment