• Estuary of Teesta and Rangit Rivers

  • Teesta View Point

  • Chatakpur, Darjeeling

  • Chilapata Forest

Tuesday, January 21, 2020

তাজপুর ভ্রমণ - Tajpur Tour

 তাজপুর।। সপ্তাহান্তে সমুদ্র সৈকতে পরিবারের সাথে দুটো দিন নির্জনে বালিতে লুটোপুটি খেতে হলে, যেতেই হবে তাজপুর। দীঘা নয় মন্দারমণি নয়, যেতে হবে তাজপুর।।

কোথায় এই তাজপুর :-
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর থানা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে সমুদ্র সৈকত তাজপুর।
কি আছে এই তাজপুরে :---
কিছুই নেই দেখার মতো, রয়েছে অপূর্ব সুন্দর বালিয়াড়ি, লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি খেলা, আপন মনে ঘুরে ও সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে পারবেন। বেশি মানুষ জন নেই খুব নিরিবিলি পরিবেশে।



কি ভাবে যাবেন এই তাজপুর :--
যদি আপনি গাড়ি নিয়ে যেতে চান, তাহলে দীঘার রাস্তায় যেতে হবে। চাউল খোলার পর দেউলি, তারপর আসবে তাজপুর মোড়। ঐখানে বামে চার কিলোমিটার গেলেই তাজপুর সমুদ্র সৈকত।



যদি কলকাতা থেকে বাসে যান, তাহলে দীঘাগামি বাসেই যেতে হবে ও তাজপুর মোড়ে নেমে টো টো করে চার কিলোমিটার গেলেই তাজপুর।
যদি ট্রেনে যেতে চান :--
Train No 12857 Tamralipta Express.
Howrah : 06.35,. Ramnagar : 09.25
Fare : 2S : ₹105, CC: ₹ 380
আপনাকে নামতে হবে রামনগর স্টেশনে, ওখান থেকে ৮ কিলোমিটার তাজপুর সমুদ্র সৈকত। গাড়ি বা টৌ টৌ করে যেতে হবে।
ট্রেন এ আসলে রামনগর আর বাস এ আসলে বালিসাই নামতে হবে,তারপর গাড়ি বা টৌ টৌ
এখানে চেক ইন 10 am, তার আগে এলে আপনার রুমে চেক ইন করতে নাও দিতে পারে,আগে থেকে কথা বলে নিন।

হাওড়া থেকে আরো দুটি ট্রেন রয়েছে।
Train No 12847 DGHA - SUP - AC Express.
Howrah : 11.10, Ramnagar : 14.00
Fare : Cc: ₹500, EC : 890
Train No : 22897 KANDARI EXPRESS
Howrah : 14.15,. Ramnagar : 17.05
Fare : 2S : ₹105, CC : ₹380
যাওয়া তো হলো, কিন্তু থাকবেন কোথায় :--
তাজপুরে থাকার মতো অনেক হোটেল ও রিসর্ট রয়েছে।
1. Swapnapuri Hotel & Resort.
Phone : 09800561985

2. Mallikka Resort.
Phone : 033-24320676

3. Hotel Sea Conifer
Phone : 09051087145

4. Tajpur Beach Resort
Phone : 09830818855


5. Sabuj Saikat Resort
Phone : 09730956024

যাক, থাকার ও ব্যবস্থা হয়ে গেল। আর খাওয়া দাওয়া, প্রত্যেক রিসর্টে রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
তাই, এই সপ্তাহান্তে চলুন যাওয়া যাক।
ঘুরে এসে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।

Pradip Ghosh

Monday, January 20, 2020

মৃত্যুর মুখে সুন্দরবনে - ( পর্ব.. এক) - In the face of death in the Sundarbans (1st Part)

 সাল 2007, কোম্পানির টার্গেট করতে পারার জন্য স্টাফদের( দুজন) নিয়ে সুন্দরবন যাবো, ওটাই শর্ত ছিল।

সঙ্গে ভিড়লো আমার পাড়ার দুই বন্ধু। মাস ছিল
সেপ্টেম্বর বা আগস্ট। আমার এক স্টাফ সঞ্জয়ের দিদির বাড়ি রায়দিঘিতে। ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিলাম পাঁচজন। দুদিনের সুন্দরবন ট্যুর। বাড়িতে কোম্পানির ট্যুর বললাম, না হলে যেতে দিতো না।
ছোট অঞ্চল, কিন্তু বেশ জমজমাট ছিল তখন রায়দিঘি। ছোটখাটো গ্রাম থেকে লোকজন ভিড় করে এখানে পাইকারি ব্যবসা আছে বলে।
দিদির বাড়িটাএকটা শাখা নদীর পাশে। মাটির ঘর, খুব সুন্দর একটা উঠোন। গোবর লেপে আলপনা করা। জামাইবাবু রসিক মানুষ। দুপুরের খাওয়া সেরে আড্ডা মারতে মারতেই সন্ধে হবো হবো। আমরা বাইরে বেরোলাম নৌকার খোঁজে।
আমাদের যা চাহিদা , অনেক নৌকাই যেতে রাজি হবে না। সেটা হলো তিনরাত্রি নৌকায় থাকবো, গভীর জঙ্গলে ঢুকবো, একটা নামমাত্র পারমিশন করিয়ে। আপত্তি যতো না জঙ্গলের তার থেকেও
বেশি জলদস্যুর। যারা বাংলাদেশ থেকে
অবৈধভাবে আমাদের জঙ্গলে ঢোকে, মধু, কাঠ নিয়ে ফিরে যায় কিন্তু অন্য নৌকা দেখলে লুঠ করতেও ছাড়ে না। মেরে ফেলে রেখে নৌকা নিয়ে চলে যাবে, লাশ খুঁজেও পাওয়া যাবে না। তাই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট টুরিস্ট allow করেও না।
খান দু কিমি হেঁটে মাঝির(নাম ভুলে গেছি) বাড়ি পৌঁছলাম। বাবু বাইরে বসে মুড়ি আর বাংলা খাচ্ছিল। জামাইবাবু যাই বলে সে দেখি শুধু মাথা দুদিকে নাড়ায়। কিছুতেই রাজি হচ্ছে না। আরো যে
অপশন নেই তা নয়, কিন্তু ইনি বাইরের জঙ্গল সমন্ধে বেশি অভিজ্ঞতা রাখে। বলে রাখি, এই বাইরের জঙ্গল মানে হলো কোর এরিয়া। সবাই যায় না। (ইনি যান, কাঠ চুরি করতে, কেনে রায়দিঘির কাঠের ব্যবসায়ীরা)।
জামাইবাবু দেখি প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিলো। একথা সেকথা বলতে বলতে সময় নিলো, বাংলার নেশাটা
চড়তে দিলো। আমি বেশ মজা নিচ্ছি। আধঘন্টা বাদে আবার ওই একই প্রসঙ্গ, এবারও রাজি নয়, তবে কেমন নিস্তেজ। নিমরাজি হয়ে মাঝি সরাসরি
টাকার প্রসঙ্গে চলে গেলো। ভালো টাকার ডিমান্ড করলো। একটু কমিয়ে রফা করে যাত্রা নিশ্চিত করলাম। এবার সবাই মিলে বাজারের পথে। আজ রাতেই রওনা।
রাত আটটা নাগাদ একটা পশলা বৃষ্টি হলো। বেশ শীত শীত করছে। কিন্তু উদ্যম প্রচুর। গেলাসে আওয়াজ তুলে উদ্যম বাড়িয়ে নেওয়া হলো। ইতিমধ্যে মাঝির দুই স্যাঙাত ও এসে গেছে। নির্মেদ চেহারার দুজন, "সুদাম" আর "বাপ্পা"। তিনদিনের রেশন কম তুলি নি। চাল, সবজি, মাংস, ডিম , তেল অনেক মালপত্র। সত্যি বলতে কি, আমি কম কাজই করছি, নির্দেশ দিচ্ছি বেশি। মাঝি যা ডিজেল চেয়েছিল, তার চেয়ে বেশি তুলেছি। হটাৎ আমি খেয়াল করলাম, নৌকার পিছন দিক বড়ো সরো ফাঁক। ভয় পেয়ে গিয়ে মাঝিকে জিজ্ঞেস করতে, খুব গম্ভীর হয়ে বললো, সামনে ঠিক আছে, পিছন ফাঁকা হতেই পারে। বোঝো !!!
রাত এগারোটা নাগাদ, নৌকো স্টার্ট হলো। ছোট একটা শাখা নদী ধরে যাচ্ছি। আমার চোখ বারেবারে পিছন দিকে চলে যাচ্ছে, ফাঁক দিয়ে নদীর জল দেখা যাচ্ছে। আমি আবার সাঁতার জানি না। ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে, বেশ কাঁপুনি লাগছে। ইঞ্জিনের আওয়াজে কথা একটু জোরে বলতে হচ্ছে। ছাউনির মধ্যে একটা টুনি লাইট জ্বলছে, তাতেই আলোয় আলো। আমরা সব কটা
ছাউনির মধ্যে জড়ো হলাম। চোখ গেল মাঝির দিকে, যতই বাংলা খাক, নৌকার হাল ধরে চুপচাপ,সতর্ক, টানটান। নিশ্চিন্ত হয়ে শরীর টান করলাম, খুব ক্লান্তি শরীরে, শুয়ে পড়লাম। ভোরবেলা ওরা তুলে দেবে। চার, পাঁচ ঘন্টার টানা জার্নি। নেশার চোটে, ঘুমের ঘোরে হটাৎ কবি হয়ে উঠলাম, বিরবিড়িয়ে উঠলাম..
" টানা দু দিন ধরে মুক্ত আমি, দুনিয়া চুলোয় যাক
চিন্তা শুধু একটাই আমার,নৌকার পিছনে ফাঁক"



Personal Experience - Rajib Bashu

Saturday, January 11, 2020

সুন্দরবন - Sundarban

 গত ডিসেম্বর ঘুরে এলাম সুন্দরবন। আমাদের, যাদের 'বাহিরপানে চোখ মেলেছি ' মানসিকতা, তাদের ছটফটানি যেন আরও বেশি। অবশ্য ভিতরপানেও চেয়েছি। আমরা, যারা অফিসে কর্মরতা, তারা দশভুজা না হোক দ্বিভুজা হয়েই সমান দক্ষতায় অফিস ও বাড়ী সামলেছি। তেমনই একজন দক্ষ ও staminaওয়ালা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল সুমেলী টিনা।ওর সাথে এ বছর জানুয়ারিতে দারি়ংবাড়ী গিয়ে বড় ভালো লেগেছিল। তাই এবার সুন্দরবন ভ্রমণ এর কথা বলতেই এক পায়ে খাড়া !

                                                        বিস্তীর্ণ নদীতে সুন্দরবনের চরদ্বীপ

যাক, অনেক ভুমিকা হল। অথ সুন্দরবন কথা। 19শে ডিসেম্বর শনিবার সকাল 6.30মিনিটে বিরাটির মোড় থেকে লাক্সারি রিজার্ভ বাসে উঠে পড়লাম।

সায়েন্স সিটি ছাড়াতেই সুমেলীর pack d bag কোম্পানির ছোট ব্যাগ কেক বিস্কুট ফ্রুটি সহ দেওয়া হল। এরপর বাস গ্রাম গঞ্জ মাছের ভেড়ি পেরিয়ে ভোজের হাট , মালঞ্চ, বাসন্তী ওভারব্রিজ দিয়ে সোজা গদখালি লঞ্চ ঘাট। এখানে মিষ্টি ডাবের জল welcome drink হিসাবে খেলাম। নোনা জলমাটির জন্য সুন্দরবন এলাকায় প্রচুর নারকোল গাছ আছে। এখানকার সর্বত্র ডাব সস্তা আর অনেকটা মিষ্টি জল। একে একে উঠে পড়লাম আমাদের জন্য নির্দিষ্ট তরিনী লঞ্চে। যদিও লঞ্চের খোলে খাট বিছানা পাতা আমরা অধিকাংশ উপরে বসলাম ভাল করে দেখার জন্য।

আহা, আর কি হেরিলাম! লঞ্চ কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখি নদী আরও চওড়া হচ্ছে। সামনে বিস্তৃত জলরাশি,দু পাশে সুন্দরবনের দু একটা দ্বীপ আর ঘন ম্যানগ্রোভ এর জঙ্গল। সূর্যের রোদ জলে পড়ে রুপোর মত ঝকঝক করছে। এর মধ্যে সকালের খাবার চলে এল। গরম গরম লুচি, আলুর তরকারি, ডিম সেদ্ধ, কলা আর নলেন গুড়ের রসগোল্লা। বাসেও একটা করে ভালো কোয়ালিটির সন্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠাণ্ডা হাওয়ার জন্য বার বার লিকার চা ও দেওয়া হয়েছে।
                                                                       ঝড়খালির প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ 

লঞ্চ ভিড়ল ঝড়খালির ঘাটে।সেখান থেকে হেটে গেলাম প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। এখানে আহত দুটি রয়াল বেঙ্গল টাইগারকে পরিচর্যা করে যত্নে রাখা হয়েছে। চারপাশে পরিখায় বেশ কয়েকটা কুমির দেখলাম। তারা আবার কেউ কেউ পাড়ে রোদ পোহাচ্ছে। পুরো এলাকাটা লম্বা লম্বা লোহার রড দিয়ে পাঁচিল দেওয়া। সবাই বোটে (স্থানীয় লোকেরা লঞ্চকে বোট বলে) ফিরে আসতে বেশ বেলা হয়ে গেল। এসেই গরম ভাত ডাল পাঁচমিশালী তরকারি, দই কাতলা, চিংড়ির মালাইকারি,চাটনি,ভালো পাতা দই দিয়ে লাঞ্চ করতে করতে বিকেল হয়ে গেল। এখানে লঞ্চে স্থানীয়রা রান্না করেন তাই সব খাবারই গরম, তাছাড়া এনাদের হাতের রান্না খুব ভালো। বিকেলে সূর্যাস্তের সোনালী আলো যেন নদীর জলে গুলে গেল। অপুর্ব সে দৃশ্য! যদিও মোবাইল ক্যামেরায় সে দৃশ্য ঠিক তোলা গেল না। আস্তে আস্তে চরাচরে অন্ধকার নামল। দুরে পাখিরালয় দ্বীপের আলো দেখা গেল। প্রচন্ড ঠান্ডা, তার উপর জলীয় ঠান্ডা হাওয়া বইছে। পাখিরালয় দ্বীপ এসে গেল। আমাদের নামতে হবে। আজ রাতে আমরা এখানে 'আপনজন' রিসর্টে থাকব।

Shikha Sengupta