Monday, November 23, 2020

টংলু, দার্জিলিং - Tonglu, Darjeeling

 তাজপুরে ঘুরতে গিয়েছিলাম এই আগস্ট মাসের সময়, 6জন বন্ধুমিলে। কিন্তু কয়েকজন বন্ধু যেতে পারেনি, তাদের কথা ভেবেই খারাপ লাগছিল, ঠিক করি সামনের নভেম্বরের ৮ তারিখে বেড়াতে যাব সবাই মিলে টংলু, ১রাত থাকব, বাকি যাওয়া আসা মিলিয়ে যে ছুটি দরকার তাতে আর কাওকে অতিরিক্ত ছুটি নিতে হবে না কারন শুক্রবার বিকেলে বেরিয়ে রবিবার ফেরা । ২০মিনিট কি ৩০ মিনিটের মধ্যে সবার জন্য টিকিট কেটে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেই ১রাত থাকার বদলে দুই রাত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।



সেই দিন এল, অপেক্ষার শেষ, 9জন বন্ধু বান্ধবী ব্যাগ গুছিয়ে খাগড়াঘাট রেল স্টেশন থেকে সন্ধ্যে 6 টার সময় গাড়ি ধরি, দুই বন্ধু আগেই থেকে উঠেছে দুপুরেই এই এক এ গাড়িতে শিয়ালদা থেকে , আর যাদের জন্য এই ট্রিপ টা করেছিলাম তারাও আগের বারের মত এবার যেতে পারেনি বিশেষ জরুরি কারনে। গল্প আড্ডা সেরে, আগেই নিয়ে আসা খাওয়ার খেয়ে ঘুম দিলাম সবাই কারন মাঝরাতে (২ঃ৪০) ট্রেন থেকে নামতে হবে। তবুও বদ অভ্যাস মাঝ রাতে ঘুমনো তাই শেষে 1ঘন্টা ঘুমের পর পৌছলাম NJP Station । ফ্রেশ হয়ে বেরলাম তখন সকাল 5টা প্রায়। লেপচা-জাগাত এর দুটো গাড়ি বলাছিল। তাদের সাথেই মানেভঞ্জনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মাঝ পথে লেপচা জাগাতে রবিন ভাইয়ার সাথে দেখা করে নিলাম। উনি একটি হোম স্টে এর মালিক, নাম Pakhrin homestay , যেখান থেকে রাতের ঝলমলে দার্জিলিং শহরটা অপুর্ব লাগে দেখতে। 4বার থেকেছি ওখানে। যাই হোক,



মানেভাঞ্জান পৌছে আনিল ভাইয়ার সাথে কথা বলে দুটি 70বছরের পুরনো land rover গাড়ি নিয়ে রউনা। প্রথম গন্তব্ব টংলু, এখানে এই নিয় 7-8 বার থাকা হলো। এখানে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার যে দৃশ্য দেখা যাই তার তুলনা হয়না। তো টংলু তে একটাই সরকারি ট্রেকার্স হাট , আর একটা homestay আছে রাজিবের, আর সদ্দ্য বানানো একটা homestay যেটা সরকারি ট্রেকার্স হাট থেকেই সামলানো হয়। আগেই বলে রাখা ছিল সেই রুম গুলই পৌছে ব্যাগ গুলো রেখেই বাইরে এসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য



একটু সময় নিয়েই দুপুরের খাওয়ার খেয়ে একটু রেস্ট । তার পর বিকেলে উঠে চললাম কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য, বিকেলের পরন্ত দদ্দুর সেই কাঞ্চনজঙ্ঘাকে রাঙ্গিয়ে দিতে দিতে এক সময় টক টকে লাল রং এ পরিনত করেছিল। সেটা দেখানোর জন্য সকল কে হাক মারলাম কিন্তু এলো ৫-৬জন। তাদের সাথে সেই দৃশ্য উপভোগ করে ও কিছু ছবি তুলে রুমের মধ্যে আসলাম। সন্ধে টা একটু আড্ডা দিয়ে গান শুনে কাটিয়ে রাতের খাওয়ার খেয়ে ঘুম দিলাম রাত তখন ৯ঃ৩০ , তার মাঝে ভূতের গল্প বেশ জমে উঠেছিল। সকালে ৪ঃ৩০ থেকে সবাই রেডি সানরাইস দেখবে বলে, তখন খুব অন্ধকার। অনেক বলে ওদের আটকে শেষে সকাল ৫ঃ১৫ নাগাদ বেরলাম সবাই। ৫ঃ৩০ এর পর দেখলাম সেই অপূর্ব সোনালি রঙের কাঞ্চনজঙ্ঘাকে।



এবার রউনা দিলাম চিত্রের উদ্দেশ্যে, একটাই homestay , মালিকের নাম phuntsok , মজা করে বলেন আমার নাম phuntsok , কিন্তু wangdu নই (হিন্দি তে) । সেখানে ২ টো রুম নিয়ে বেরলাম চিত্রের মাঠে । সেখানে ৩-৪ ঘণ্টা কাটালাম , দেখলাম কি ভাবে পরিস্কার আবহাওয়া থেকে ঘন মেঘে ঢেকে যাই চারপাশ। কত মেঘ যে গায়ে লেগে বেরিয়ে গেল। আর তার অসাধারন অনুভুতি । সন্ধ্যাই একটু ক্যাম্পফায়ার সেরে রাত্রি ভজন করে আবার বেরলাম বাইরের দৃশ্যটা দেখব বলে, কারন আজই এই ট্রিপের শেষ রাত্রি। ১ ঘণ্টা বাইরে কাটিয়ে রুমে এসে ঘুম, ভোরবেলাই সবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে সানরাইস দেখালাম রুম এর ব্যাল্কনি থেকেই। এর পর বাড়ি ফেরার পালা......।

Sumit Das

0 comments:

Post a Comment