উত্তর সিকিমের মাংগান সাব-ডিভিশনের এক ছোট্ট গ্রাম রিংঘিম। রিংঘিমের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গেলে হয়তো বলতে হয় এ যেন উত্তর সিকিমের এক ছোট্ট ঝুলন্ত বারান্দা। যে বারান্দায় বসে আপনি সারাদিন মন ভরে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পারেন, নানা নাম না জানা পাখির ডাক শুনতে পারেন, প্রিয় জনের সঙ্গে বা একাই হারিয়ে যেতে পারেন সবুজের মাঝে।


রিংঘিমে একবার এলে ইট-কাঠ এর জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছেটাই হয়তো হারিয়ে ফেলতে পারেন। কখন আপনার জানলায় এসে মেঘেদের লুকোচুরি খেলা কখনও বা এক অচেনা পাখির গানের সুরে হারিয়ে যাওয়া। এ নিয়েই কেটে যায় সময়।

আর অন্যদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন আপনার আরও কাছে এসে তার রূপ-লাবণ্যে আপনাকে করে তোলে বুঁদ। এমনই এক মায়াবী রহস্যে মোড়া রিংঘিম আস্তে আস্তে পরিচিত হচ্ছে ভ্রমণপিপাসু ট্রাভেলারদের মনে। মাংগান থেকে খুব কাছে হওয়ায় যাতায়াতের ও সুবিধা।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দিনে দিনেই চলে আসা যায়। গাড়ীতে আসতে অনেকটা সময় লাগলেও নর্থ সিকিমের সৌন্দয্য আপনাকে ক্লান্ত হতে দেবে না। রিংঘিমে বেশ কয়েকটি হোমস্টে গড়ে উঠেছে। সারাবছরই কম বেশি মানুষ আসছেন। তবে পাহাড়ে এসে যারা ওয়াইফাই-টিভি, থ্রি স্টার সুবিধা, সাইটসিনের লম্বা তালিকা খোঁজেন এ জায়গা তাদের জন্য নয়। নিরিবিলিতে প্রকৃতিকে নীলকন্ঠের মত যারা পান করে নিতে চান তাদের জন্য আদর্শ। হোমস্টেতে ছবির মত সুন্দর সাজানো বাগান আর সুস্বাদু খাবার, আতিথিয়তা আপনার মন কাড়বে।
কাছে পিঠে দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অপূর্ব কটি গ্রাম, জঙ্গু, সিংঘিক এবং টিংচিম। গ্রাম গুলি অবশ্যই ঘুরে আসবেন। আপনার ভ্রমণ স্মৃতির মনের গোপন ডাইরীতে সারাজীবন লেখা থাকবে। টিংচিম এর শতাব্দী প্রাচীন মনাস্ট্রী এবং পবিত্র এমারেল্ড লেক আপনাকে মুগ্ধ করবে। জঙ্গু একটি ছোট ছবির মত সাজানো লেপচা গ্রাম, মূলতঃ পাখিপ্রেমীদের স্বর্গ। নানারকম হিমালয়ান বার্ডের দেখা মেলে এই গ্রামে। প্রকৃতি যে কি অসম্ভব সৌন্দর্য্যে সেজে বসে আছে তা এই গ্রাম গুলিতে না এলে জানতেও পারবেন না। জঙ্গু থেকে ত্রিণভং এর দৃশ্য অসাধারণ। এছাড়া রিংঘিমের হেলিপ্যাড, হেলিপ্যাড থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য দারুণ। রিংঘিমের মোনাস্টিক স্কুল ও এক দর্শনীয় স্কুলটিও অবশ্যই দেখে আসবেন। এছাড়া লাবরাং মনাস্ট্রী, ফোডোং গুম্ফা, রং লুংটেন লি মিউজিয়াম ইত্যাদি অবশ্যই দেখবেন।









0 comments:
Post a Comment