Sunday, March 10, 2019

দেউলটি (হাওড়া) - Deulti(Howrah)

 দেউলটিতে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি ও বর্ষায় রূপনারায়ন নদীর রুপ দেখা ঃ

০৩ - ০৮ - ২০১৮
এক বর্ষার দিনে বেড়িয়ে পড়লাম বর্ষায় রূপনারায়ন নদীর সৌন্দর্য‌্য দেখবো বলে । সকালবেলা হাওড়া থেকে মেচেদা লোকাল ট্রেনে উঠে বসলাম । প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর কোলাঘাট ষ্টেশনের আগে দেউলটি ষ্টেশনে নামলাম । ওখান থেকে হেঁটে এবং দুবার অটো পালটে পৌছালাম এক ছোট্ট নিরিবিলি গ্ৰামে। এই গ্ৰামেই ঈশ্বর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি ।

কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের বাড়ি , দেউলটি
                                     কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের বাড়ি , দেউলটি


স্থানীয় লোকের কাছে খোঁজ নিয়ে বাড়ির কাছে এসে পৌঁছালাম । খুব সুন্দর ভাবে রক্ষনাবেক্ষন করা হয়েছে বাড়িটি । এক কেয়ারটেকার এসে বাহিরের গেট খুলে দিলেন ভিতরে প্রবেশ করার জন্যে । উনি একতলার সব ঘরগুলো বাইরে থেকে দেখিয়ে তাঁর ইতিহাস বর্ণনা করলেন ।
পাশের রাস্তা থেকে দেখা শরৎচন্দ্রের বাড়ি
                                     পাশের রাস্তা থেকে দেখা শরৎচন্দ্রের বাড়ি 

ওনার কাছ থেকে জানলাম শরৎচন্দ্রের এক ভাইপো এখন এই বাড়িটির রক্ষনাবেক্ষন করছেন । বাড়ির পিছনে ধানের গোলা, রন্ধনশালা ইত্যাদি সবই রয়েছে । পাশেই একটি শান বাঁধানো ঘাট সহ পুকুর রয়েছে , যে পুকুরের উল্লেখ ওনার কয়েকটি গল্পে পাওয়া গিয়েছে । ওনার বাড়ি থেকে দূরেই দেখা যাচ্ছে রূপনারায়ন নদী । যে নদী একসময় এই বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যেত আজ তা ভাঙনের কারণে দূরে সরে গিয়েছে । পুকুর ঘাটে কিছুক্ষণ বসে তারপর গ্ৰামের পথ দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম রূপনারায়ন নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে । গ্ৰামের মধ্যে কিছুটা ঢুকে তারপর ক্ষেত্রের আল দিয়ে হাঁটা শুরু । কাদা এবং পিছলা পথ এঁকে বেঁকে কিছুটা পার হয়ে অবশেষে নদীর পাড়ে এসে পৌছালাম ।
বর্ষার রূপনারায়ন নদী , দেউলটি
                                                    বর্ষার রূপনারায়ন নদী , দেউলটি 


বর্ষায় জলে ভরাট নদী । মাঝে মধ্যে দু-চারটি নৌকা যাতায়াত করছে , যার অধিকাংশ মাছধরার নৌকা । নদীর পাড়ে ঘাসের উপর বসে ভরা বর্ষার নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা , সে এক আলাদা অনুভূতি । নদীর পাড় বরাবর স্থানীয় লোকজন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মাছের মিন (চারা) অর্থাৎ চারা মাছ বা ছোট্ট মাছ ধরছে । জানলাম এই কাজ এখানকার মানুষের একটা বড় জীবিকা । এই কাজ থেকে চার ঘন্টায় গড়ে উপার্জন হয় একশো থেকে দেড়শো টাকা । কিছুক্ষণ পরে মেঘের ঘনঘটা । বৃষ্টি শুরু হল । রূপনারায়ন নদীতে বৃষ্টি , সে এক অপরূপ দৃশ্য । পাড়ে বসে সেরূপ দেখার সৌভাগ্য হলো । সাথে ছাতা থাকায় খুব একটা অসুবিধা হয়নি । বেশ কিছু ক্ষন ওখানে কাটিয়ে, কিছু জীবনিশক্তি সঞ্চয় করে কলকাতায় ফেরার পথ ধরলাম ।


Nikhil Dutta

0 comments:

Post a Comment