কালিম্পং থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে, রংপো যাওয়ার পথে সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এক ছোট্ট পাহাড়ী হ্যামলেট সাংসের। অনেকেই হয়তো নাম শোনেন নি তবে ন্যাওড়াভ্যালি ন্যাশানাল পার্কের আভ্যন্তরীণ ডেলো পাহাড়ে ঘেরা সাংসের খাসমহল প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। ইট-কাঠ-পাথরের জঙ্গলে দৈনন্দিন একঘেয়ে কর্মজীবনে যারা ক্লান্ত, তাদের জন্য টি এস এলিয়টের ভাষায় এ যেন এক প্রকৃত "এসকেপ ফ্রম রিয়েলিটি"।
ঘন সবুজ প্রকৃতির লুকোনো এই ঠিকানা আপনার একঘেয়ে জীবনের ক্লান্তি কাটানোর এক আদর্শ ডেস্টিনেশন হতে পারে। দুদিনের ছুটিতে যারা কাছে-পিঠে পাহাড়ী অফবিটের সন্ধান খুঁজছেন তারা আসতেই পারেন সাংসেরে। একদিকে সুন্দরী তিস্তার আনমনে বয়ে যাওয়া আর অন্যদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা কে যেন হাত দিয়ে ছুয়ে ফেলা যায় সাংসের থেকে। সবমিলিয়ে প্রকৃতি তার সব উজার করে অভ্যর্থনা করবে আপনাকে। ছোট্ট গ্রামটিতে জনসংখ্যা খুবই কম, হোমস্টে ও খুব বেশি নেই। তবে হোমস্টের আতিথিয়তা চমৎকার।
এই হোমস্টেটির বারান্দায় বসেই আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘার উপস্থিতি অনুভব করবেন। বসবার জন্য চমৎকার কয়েকটি শেড করা আছে এখানে। প্রিয় মানুষদের সাথে এখানে বসে আকাশে মেঘের খেলা দেখতে দেখতে কেটে যেতে পারে কয়েকটা বেলা। হোটেল বা রিসর্টের আতিশয্য না পেলেও হোমস্টেতে পাবেন ঘরের মানুষের মতো আতিথিয়তা।
এখান থেকে খুব কাছেই কালিম্পং শহর। মাত্র ১৪ কিমি দূরে হওয়ায় দিনে দিনে কালিম্পং থেকে ঘুরে আসতে পারেন। দূরপীন, ডেলো, রামিতে ভিউ পয়েন্ট, হনুমান টক প্রভৃতি স্থান খুব কাছেই। এগুলোও ঘুরে আসা যায়। লাভা-লোলেগাও, রিশপ, কোলাখাম, ইচ্ছেগাঁও, সিলেরিগাও প্রভৃতি সাংসের থেকে ঘুরে আসা যায়। ন্যাওড়াভ্যালি ন্যাশানাল পার্কের অন্তর্গত হওয়াও এই সাংসের এর আসেপাশেই হেঁটে হেঁটে উপভোগ করতে পারেন হিমালয়ের এই লুকনো আস্তানা কে। যারা পাখি ভালোবাসেন, নানা পাখির খোঁজ করেন হিমালয়ের আনাচে কানাচে তাদের জন্য এক কথায় স্বর্গীয় এক ঠিকানা সাংসের। প্যাকেজ ট্রিপের দৌড়াদৌড়ি, তথাকথিত টুরিস্ট স্পটের ভীড় এড়িয়ে তাই আপনার আস্তানা হোক সাংসের।


















0 comments:
Post a Comment