Tuesday, March 17, 2020

লাল ঝামেলা বস্তি, জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং Lal Jhamela Basti, Jalpaiguri

 লাল ঝামেলা বস্তি। না না কোনো ঝামেলা করার ইচ্ছা আমার নেই।

এটা একটি জায়গার নাম, ডায়ানা নদীর পাড়ে উত্তরবঙ্গের একটি খুব সুন্দর জায়গা লাল ঝামেলা বস্তি।এটি আবার আমাদের দেশ INDIA এবং BHUTAN এর বর্ডার ও বটে।
যদি হাতে দুদিন সময় থাকে তো খুব ভালো করে ঘুরতে পারবেন এই জায়গা।

আমরা গিয়েছিলাম শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে(দার্জিলিং মেল,10:05 pm) চড়ে NJP RAILWAY STATION । তারপর সেখান থেকে চলে এলাম শিলিগুড়ি'র পি সি মিত্তল বাস স্ট্যান্ড। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন বৃষ্টির জন্য SAVOK ROAD এ ধ্বস নেমেছিল বলে আমাদের বাস গাজোলডোবা'র রাস্তা ধরে গিয়েছিল।

প্রথম যাওয়া হল নাগরাকাটা ,তারপর সেখান থেকে একটা টোটো করে আমার পৌঁছে গেলাম আমাদের প্রাথমিক গন্তব্য সৌমেন'দার জলঢাকা রিভার রিসর্ট। সব মিলিয়ে NJP থেকে মোটামুটি 2.5 ঘণ্টা সময় লাগে।
আমাদের পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেলা প্রায় দুটো বেজে গিয়েছিল । তাই সেদিন আর কোথাও যাবার প্ল্যান করলাম না। দুপুরবেলা জলঢাকা নদী থেকে ধরা একদম টাটকা বরোলী মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে পেট পূজো করা হল।

এরপর খাওয়া দাওয়া সেরে একটু রিসর্টের চারপাশটা ঘুরে দেখার পালা। সে এক অদ্ভুত সৌন্দয্যের সংমিশ্রণ ।
🙂👌🏻
একদিকে সারি সারি সবুজ চায়ের বাগান , আরেকদিকে রিসর্টের ঠিক পিছন দিকেই কুলকুল শব্দ করে বয়ে চলেছে জলঢাকা নদী , নদীর পাশে ছোট ছোট পাহার আর একদিকে সমতলভূমি যেখানে চাষ-আবাদের জায়গা , সেখানে দুটো গরু বেধেঁ রাখা রয়েছে। পরন্ত দুপুরের নিঃস্তব্দতার মাঝে গরুর গলার ঘন্টার টুং টুং আওয়াজ আর জলঢাকা নদীর কুলকুল শব্দ পুরো পরিবেশকে দারুন মোহময় করে তোলে☺️ ।এই জলঢাকা নদীর ওপর দিয়ে চলে গেছে একটি রেলব্রীজ । এটা হল শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার যাওয়ার রেলপথ । যদিও আমি যখন এই জায়গার ওপর ভিডিও বানাচ্ছিলাম তখন এই রেলব্রীজ সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানতাম না। পরে আশেপাশের লোকজনের থেকে জানতে পেরেছিলাম।

এখানেই দেখা হয়েছিল কিছু রাখাল ছেলেদের সাথে , যারা দিনের শেষে তাদের গরু গুলোকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল । ওদের ডেকে নিয়ে বসালাম আমার কাছে,অনেক গল্প হল ওদের সাথে
😎। আমার ভিডিওতে ওদের চাক্ষুস করতে পারবেন😊। পরন্ত বেলায় সূর্যাস্তের আলোয় চারদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দয্য তখন একদম চরমে🤓
যাই হোক সেই দিন বিশ্রাম নিয়ে পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করে আমরা রওনা দিলাম আমাদের মূখ্য গন্তব্যস্থল "লাল ঝামেলা বস্তি"।👍

আমাদের গাড়ি ঠিক করে দিয়েছিলেন রিসর্টের owner সৌমেনদাই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
নাগরাকাটা থেকে মোটামুটি 15-20 km এর রাস্তা লাল ঝামেলা বস্তি । গাড়িতে যেতে মোটামুটি আধ ঘন্টা সময় লাগে।
চেংমারি Tea Garden এর চায়ের বাগানকে দুদিকে রেখে যখন আমাদের গাড়ি
সাঁই সাঁই করে মাঝখান দিয়ে ছুটে চল্লো লাল ঝামেলা বস্তি'র দিকে , তখন যে অনুভূতি মনের ভিতর হচ্ছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা।😍

অবশেষে আমরা পৌঁছালাম আমাদের বহুকাঙ্খিত জায়গা লাল ঝামেলা বস্তি।😊
মনে হচ্ছিল This is nothing but the Heaven on the earth❤️ । দুদিকে সবুজঘন পাহার , মাঝখানে সমতলভূমি আর সেখান দিয়ে বয়ে চলেছে ডায়ানা নদী। এটা ভেবেও দারুন লাগছিল যে আমি একটা আন্তর্জাতিক সীমানায় দাড়িঁয়ে আছি । যেখানে একদিকে আছে ইন্ডিয়া আর এক দিকে আছে ভূটান। দারুন অনুভূতি।🙂
অতঃপর বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে এবার আমরা ভাবলাম আমাদের ট্রেন তো সেই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়, আর তখন বাজে বেলা 12 টা, তো এতক্ষণ আমরা কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।

তখন আমাদের ড্রাইভার সাহেব আমাদেরকে পরামর্শ দিলো ঝালং আর বিন্দু ঘুরে দেখার জন্য। ব্যস্ আর কি, যেমন ভাবা তেমন কাজ।
চলো ঝালং বিন্দু। 🤓
চাপরামারি অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে আমরা 40-50 মিনিটের মধ্যেই পৌঁছালাম ঝালং। পাহাড়ি সৌন্দর্য্যে ঘেরা জায়গা, আর তার মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা ঝালং নদী। অনির্বচনীয় সুন্দর জায়গা। 🙂
এরপর চললাম বিন্দু। বিন্দু বিখ্যাত এখানকার ড্যাম এর জন্য। এখানে বসে বিশ্রাম করার জন্য ছোট ছোট চেয়ার'ও রাখা আছে।

মন ভরে বিন্দু ড্যাম এর সৌন্দর্য উপভোগ করে এবার বাড়ি ফেরার পালা। 🙂
আমরা ওখান থেকে ফেরার পথে পথে একটা হোটেলে Lunch সেরে চললাম NJP RAILWAY STATION, সেখান থেকে ট্রেনে সোজা কলকাতা মানে বাড়ি 🙂👍
আমি কিছু ছবি শেয়ার করছি আপনাদের সাথে আর তার সাথে আমি যে ভিডিও বানিয়ে ছিলাম আমার YouTube চ্যানেলের জন্য তার Link ও আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
দেখবেন দয়া করে। আর কিছু জিজ্ঞাস্য থাকলে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমি সাধ্যমত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

Raj Sarkar

0 comments:

Post a Comment